তামিমের জয় সাকিবের হার, সাকিবের জয় তামিমের হার

বিপিএলের প্রথম দুই আসরের অভিজ্ঞতা তাঁর জন্য ছিল যেন ক্লান্তিকর। সেই অভিজ্ঞতার বোঝা টেনে চলতে চলতে আজ ছুড়ে ফেললেন তামিম ইকবাল। উদ্বোধনী ম্য...

বিপিএলের প্রথম দুই আসরের অভিজ্ঞতা তাঁর জন্য ছিল যেন ক্লান্তিকর। সেই অভিজ্ঞতার বোঝা টেনে চলতে চলতে আজ ছুড়ে ফেললেন তামিম ইকবাল। উদ্বোধনী ম্যাচেই ঝলমলে এক ‘তামিমীয়’ ইনিংস। উল্টো ক্লান্তিটা যেন ভর করল সাকিবের ওপর। যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ বিমানযাত্রা শেষে ঠিকমতো বিশ্রাম নিতে না-নিতেই মাঠে নেমে পড়া সাকিব টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তাঁর সবচেয়ে বাজে বোলিংগুলোর একটি করলেন আজ। ২ ওভারে ২২ রান দেওয়ার পর আর বোলিংয়েই এলেন না! ব্যাট করতে নেমেও তথৈবচ অবস্থা, শফিউল ইসলামের বলে আউট হওয়ার আগে ৬ বল খেলে করেছেন মাত্র ১ রান!

বিপিএলের তৃতীয় আসরের পর্দা উঠেছে সাকিব-তামিমের বিপরীতমুখী যাত্রাতেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ক্রিকেট যে দলীয় একটি খেলা। সে জন্য দুই বন্ধুর ব্যক্তিগত লড়াইয়ে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েও মুখ কালো করেই মাঠ ছাড়তে হয়েছে তামিমকে। মিসবাহ-উল-হক ও থিসারা পেরেরা বীরত্বে ইনিংসের শেষ বলে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে সাকিবের রংপুর।
চিটাগং-রংপুর, তামিম-সাকিবের লড়াই দেখতে মিরপুরে দর্শক উপস্থিতি অবশ্য বলার মতো নয়। তবে মিরপুরের হাজার ছয়েক দর্শক তৃপ্ত হয়েছেন প্রথম ম্যাচটাই জমজমাট হওয়ায়। তামিমের ৩২ বলে ৫১ রানের ইনিংসটির সৌজন্যে ২০ ওভারে চিটাগং করেছিল ৭ উইকেটে ১৮৭। রংপুর দল সেই লক্ষ্য ছুঁয়েছে একেবারে শেষ বলে। চরম নাটকীয় এক ম্যাচে উদ্বোধন হলো তৃতীয় আসরের।
দল হারলেও প্রথম ম্যাচে চনমনে এক তামিমের দেখাই মিলল। চিটাগং অধিনায়ক বিপিএলের আগের দুই আসরের ব্যর্থতা ভুলে নতুন যাত্রার প্রতিজ্ঞাই যেন করেছেন। চিটাগং কিংসের হয়ে প্রথম বিপিএলে তামিমের অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর ছিল না। দলের অস্ট্রেলিয়ার টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ডিন জোন্সের সঙ্গে বনিবনা না হওয়া, প্রথম ম্যাচের পর কুঁচকিতে চোট পাওয়া—মাঠের বাইরের নানা ঘটনায় অভিজ্ঞতা ছিল বড় তিক্ত।
পরেরবার তো দলই বদল হলো। চট্টগ্রামের ছেলে তামিমের ঠিকানা হলো রাজশাহীতে। দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে অবশ্য কিছুটা ভালো হয়েছিল। তবে আরও ভালো হতে পারত, এমন একটা আক্ষেপ রয়েই গিয়েছিল।
সে তুলনায় এবার তামিমের শুরু হলো ভিন্ন। চিটাগংয়ের হয়ে পেলেন প্রথম ফিফটি। বিপিএলে চতুর্থ। চিটাগংকে ভালো শুরু এনে দিল তামিম-দিলশানের উদ্বোধনী জুটি। ২৯ রান করে দিলশান ফিরলে তামিম-এনামুল হকের দ্বিতীয় উইকেটে ৬৫ রান তুলে দলকে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত মিলেছিল। প্রথম ১০ ওভারেই চিটাগং ভাইকিংস ১ উইকেটে করল ১০৩। সে তুলনায় পরের ১০ ওভারে কিছুটা কমই হলো—৬ উইকেটে ৮৭। তারপরও সাকিবদের সামনে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যই ছুড়ে দিয়েছিল তামিমের দল। কিন্তু মিসবাহ–তিসারা–স্যামিরা শেষ ৩৬ বলে ৯১ রানের কঠিন সমীকরণ মিলিয়ে দিয়ে সাকিবের মুখেই এনে দিল ক্লান্তি ভোলানো এক জয়ের হাসি।
কাল যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে আসা রংপুর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নিজেই বল হাতে ইনিংসের শুরুটা করেছিলেন। সেই ওভারটা খারাপও করেননি। একটি চার হজম করে দিয়েছিলেন সাত রান। কিন্তু তাঁর পরের ওভারেই রীতিমতো চড়াও হলেন দিলশান। চার বলের মধ্যে দুটো চার আর এক ছক্কা পিটিয়েছেন। ১৫ রান দেওয়ার পর আর বোলিংয়ে আসেননি সাকিব। তবে বিপিএলে নিজের সেরা বোলিং করলেন সাকলাইন সজীব। ৪ ওভারে ২৬ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট। সেই সজীবই শেষ বলে এক রান নিয়েই সতীর্থদের কাছে বনে গেলেন নায়ক!
দিনের শুরুতে তামিমের মুখে হাসি থাকলেও সেই হাসিটা উড়ে গিয়ে বসে গেছে সাকিবের মুখেই।

Related

Tamim Iqbal 4662189757800126034

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রিয় পাঠক! যদি পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগে থাকে, অথবা পোস্টটিতে আপনার সমস্যা থেকে থাকে তবে একটি গঠনমূলক মন্তব্য করার অনুরোধ করছি । কারন আপনার একটি ভালো মন্তব্য লেখককে আরো ভালো পোস্ট লেখার অনুপ্রেরণা যোগাবে। আশাকরি এমন কোন মন্তব্য করবেন না, যা পড়লে লেখকের কাছে খারাপ লাগতে পারে । সাথেই থাকুন ধন্যবাদ....

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷

emo-but-icon

পেজে লাইক দিন l

ভিজিট করেছেন

item