কি শাকের কি গুণ? জেনে নিন কিছু শাকের গুণাগুণ!
শাক দিয়ে শুধু মাছই ঢাকা যায় না, ভালো রাখা যায় স্বাস্থ্যও! শাক পাতার আছে অনেক গুণ। জেনে নিন কী শাক কি গুন আছে। এখানে কিছু শাকের নাম ও এর ...
https://abhera.blogspot.com/2016/02/blog-post_75.html
শাক দিয়ে শুধু মাছই ঢাকা যায় না, ভালো রাখা যায় স্বাস্থ্যও! শাক পাতার আছে অনেক গুণ। জেনে নিন কী শাক কি গুন আছে। এখানে কিছু শাকের নাম ও এর গুণাগুণ গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরা হলো :
সরিষার শাক : গ্রামের দিকে গেলে দিগন্ত জুড়ে যা দেখা যায় তা হলো হলুদ রঙের সর্ষের ক্ষেত। সরিষার তেল যেমন খাবারে আনে ভিন্ন স্বাদ, তেমনি সরিষার শাকেও পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে আমিষ ও স্নেহ জাতীয় ভিটামিন। এছাড়া নিয়মিত সরিষার শাক খেলে রক্তে উপকারি এইচডিএল কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায় এবং এই শাক দেহে ভিটামিন ডি তৈরিতেও সহায়তা করে।
পালং শাক : পালং শাক অন্ত্রের ভেতরে জমে থাকা মল সহজে বের করে দিতে সহায়তা করে। যার কারণে যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তাদের জন্য এ শাক খুব উপকারী। পালং শাকের বীজ কৃমি ও মূত্রের রোগ সারায় ও এর কচি পাতা ফুসফুস, কণ্ঠনালীর সমস্যা, শরীর জ্বালাপোড়া সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করে। জন্ডিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এই শাক বিশেষ উপকারী। পোড়া ঘায়ে, ক্ষত স্থানে, ব্রণে বা কোথাও ব্যথায় কালচে হয়ে গেলে টাটকা পালং পাতার রসের প্রলেপ লাগালে উপকার পাওয়া যায়। পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি, ই এবং আয়রন। এজন্য পালং শাক খেলে রক্তে আয়রনের মাত্রা বেড়ে যায়।
লালশাক : ছোটবেলার সবার খুব প্রিয় একটা শাক হচ্ছে লাল শাক। একটুখানি শাক নিয়ে ভাত মাখালে কি সুন্দর টকটকে লাল হয়ে যায় ভাত গুলো! দেখতে ভালো এবং খেতে চমৎকার হওয়ার পাশাপাশি লাল শাক রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায়। ফলে যাদের রক্তস্বল্পতা বা এনিমিয়া আছে তারা নিয়মিত লাল শাক খেলে রক্তস্বল্পতা পূরণ হয়।
কলমি শাক : কলমি শাকের রয়েছে নানান গুণ। ফোড়া হলে কলমি পাতা একটু আদাসহ বেটে ফোড়ার চারপাশে লাগালে ফোড়া গলে যাবে এবং পুঁজ বেরিয়ে শুকিয়ে যাবে। পিঁপড়া, মৌমাছি কিংবা পোকামাকড় কামড়ালে কলমি শাকের পাতা ডগা সহ রস করে লাগালে যন্ত্রণা কমে যায়। এছাড়া কোষ্ঠ কাঠিন্য হলে কলমি শাকের সঙ্গে আখের গুড় মিশিয়ে শরবত বানিয়ে সকাল-বিকাল এক সপ্তাহ খেলে ভালো উপকার পাওয়া যাবে। আমাশয়ও এ শরবত কাজ করে। গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে পানি আসে। কলমি শাক বেশি করে রসুন দিয়ে ভেজে তিন সপ্তাহ খেলে পানি কমে যায় অনেক ক্ষেত্রে। প্রসূতি মায়েদের শিশুরা যদি মায়ের দুধ কম পায় তাহলে কলমি শাক ছোট মাছ দিয়ে রান্না করে খেলে মায়ের দুধ বাড়ে।
কচু শাক : কচু শাকে প্রচুর ভিটামিন সি থাকায় এ শাকের লৌহ দেহ কর্তৃক সহজে বিপাকিত হয়। এছাড়া জ্বরের সময় রোগীকে শরীরের তাপমাত্রা কমানোর জন্য দুধ কচু খাওয়ালে বেশ উপকার পাওয়া যায়। অনেক ক্ষেত্রে ওল কচুর রস উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে প্রতিষেধক হিসেবে খাওয়ানো হয় এবং এতে বেশ ভালো উপকার পাওয়া যায়।
পুঁইশাক : কুচো চিংড়ি দিয়ে পুঁইশাক অনেকেরই খুব প্রিয় খাবার। সর্দি ও কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে দধি এবং পুঁইশাক সেদ্ধ করে খেলে ভালো উপকার পাবেন। এছাড়া পুঁইপাতা থেঁতো করে ব্রণের ওপর প্রলেপ দিলে ব্রণ নিরাময়ের ক্ষেত্রে চমৎকার ফল পাওয়া যায়।
ধনেপাতা : ধনেপাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফলিক এসিড যা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই ভিটামিনগুলো প্রতিদিনের পুষ্টি জোগায়, ত্বক, চুলের ক্ষয় রোধ করে, মুখের ভেতরের নরম অংশ গুলোকে রক্ষা করে। এছাড়া ধনেপাতার ভিটামিন এ চোখের পুষ্টি জোগায়, রাতকানা রোগ দূর করতে ভূমিকা রাখে। কোলেস্টেরল মুক্ত ধনেপাতা এলডিএল কমিয়ে এইচডিএল এর মাত্রা বৃদ্ধি করে। এছাড়া ধনেপাতায় উপস্থিত আয়রন রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে এবং রক্ত পরিষ্কার রাখতেও অবদান রাখে। ধনেপাতায় রয়েছে ভিটামিন ‘কে’ যা হাড়কে মজবুত করে।। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায় ধনেপাতা শীতকালীন ঠোঁট ফাটা, ঠান্ডা লেগে যাওয়া, জ্বর জ্বর ভাব ধনেপাতা খেলে দূর হয় ।
মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷