ভালবাসার গল্প •|• কোলবালিশ

কি ব্যাপার! না শুয়ে দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছো কেন? . নওশিন কোন কথাই বলতে নারাজ। ওয়ার্ড্রপ থেকে চাদর খানা বিছিয়েই ফ্লোর এ শুয়ে প...


কি ব্যাপার! না শুয়ে দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে আছো কেন?
.
নওশিন কোন কথাই বলতে নারাজ। ওয়ার্ড্রপ থেকে চাদর খানা বিছিয়েই ফ্লোর এ শুয়ে পরলো নওশিন। ইমু মুহূর্তেই খুব দুশ্চিন্তায় পরে গেল। কি হলো আবার এর মধ্যে, একসাথে খেলাম, গল্প করলাম হঠাৎ করেই কি এমন ঘটল। তবে একটা কারণ ঠিকি বুঝতে পারছে।
.
--কি হলো পাখি? তুমি এখানে শুয়ে পরলে কেন?
.
নওশিন বালিশে মুখ লুকিয়ে গাপ্পি মেরে শুয়ে আছে। এবার আর ইমুর উপরে শুয়ে থাকা হলোনা। আস্তে করে বালিশটা নিয়ে নওশিনের পাশে এসে শুয়ে পরলো। ইমু জিজ্ঞাস করলো---
--পাখি তোমার কি হয়েছে?
.
কথাটা শুনেই নওশিন মাথার নিচের বালিশটা নিয়ে উঠে দাঁড়ালো, খুব চরা গলায় ইমুকে বলল---
--ঐ বালিশটাকে আবার কে এই রুমে এনেছে?
--কেন পাখি, কোলবালিশটা তো এখানেই ছিল।
--তুই বললেই হলো! আমি নিজে ঐটা-কে অন্য রুমে দিয়ে এসেছিলাম। এখানে না আনলে কি হেটে হেটে এলো?
.
ইমু মিটিমিটি হাঁসছে। আসলে এটা ইমুরি কাজ। নওশিনের রাগটা ইমুর খুব ভাললাগে, তাই মাঝে সাঝেই কারণে অকারণে রাগিয়ে বসে পাগলীটাকে।
--কেন কি হয়েছে সেটাতো বলো?
.
নওশিন হাতের বালিশটা ইমুর দিকে ছুরে মেরেই বলল---
--তোকে না কতবার বলেছি, এই বিছানায় আমি থাকবো না হয় তোর ঐ কোলবালিশ থাকবে। আমায় পাশে শুয়ে উনি কোলবালিশ ধরে ঘুমাবে। কাল থেকে তুই তোর কোলবালিশ নিয়েই থাকিস আমি চলে যাবো।
.
কথা গুলো বলেই কিছুক্ষন চুপ করে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে নওশিন। দেখে মনে হচ্ছে গোখরো সাপের মতো শ্বাস নিচ্ছে আর ছাড়ছে। ইমুতো ফ্লোরে বসে বসে মিটিমিটি হেঁসেই যাচ্ছে। ইমুর এই দুষ্টুমি হাঁসি দেখে নওশিনের রাগ ক্রমশ বেড়েই যাচ্ছে। নওশিন বলে উঠালো---
--শয়তানের মতো দাঁত কেলিয়ে হাঁসছিস কেন?
--শয়তান দেখছো কোনদিন, দেখতে কি আমার মতো?
--হুম, তোর মতো!!
--তা বিয়ের আগে দেখেছ নাকি পরে দেখেছ?
--আগেই দেখেছি,
--তাহলে জেনে শুনে শয়তান কে বিয়ে করলে কেন?
.
নওশিনের রাগ এখন ১০০ তে ৯৯.৯৯ আছে। দৌড়ে গিয়ে সমস্ত রাগ সেই কোলবালিশটার উপরেই ঢাললো। রুমটা ততক্ষনে তুলায় ভরে গেছে। সিলিং ফ্যানের বাতাসে সব তুলা গুলি ঘূর্ণিপাক খাচ্ছে। ইমু মাঝখানটায় দাঁড়িয়ে নির্বাক চোখে নওশিনের দিকে তাকিয়ে আছে। পাগলীটা বালিশ থেকে তুলা গুলি হাত দিয়ে বাতাসে উড়িয়ে দিচ্ছে। ব্যাচ এতো সাধের কোলবালিশটা শেষ। নওশিন হাটু গেরে বিছানার উপর বসে আছে। সব তুলা উড়ানো শেষ হাতে কেবল বালিশটার কাভার রয়ে গেছে। ইমু বলল---
--খুশি হলে তো এবার?
--হুম, খুব খুশি হয়েছি। তোমার কোন প্রোব্লেম আছে?
--প্রোব্লেম তো একটু আছেই।
.
ইমু কথাটা বলা মাত্রই নওশিনের দু'হাত ধরে শুয়িয়ে ফেল্ল। নওশিনের দু'হাত-কে দেহের দু'পাশে বিছানার উপর চেপে ধরলো ইমু। একজনের চোখ থেকে আরেকজনের চোখের দূরত্ব সর্বচ্চ ১০ ইঞ্চি হবে। নওশিন ইতিমধ্যেই তার চোখের পাতা টেনে দিয়েছে। গোলাপি ঠোটটা মনে হয় কিছু বলতে চাচ্ছে। ইমু হঠাৎ করে বলে উঠল---
---রাক্ষসী! তুই এইটা কি করলি? আমায় বললেই তো আমি উঠাকে অন্য রুমে দিয়ে আসতাম। এই অবস্থা করার কি দরকার ছিল?
.
নওশিন তাকিয়ে বলল---
--বেশ করেছি, আরো কয়েকটা থাকলে ঐগুলারও অবস্থাও তাই করতাম।
.
ইমু আস্তে করে নওশিনের বুকে মাথা রাখলো।
--এবার হলতো? সোনাবউ আমার আজ থেকে তোমায় জড়িয়ে ধরেই ঘুম আসবো।
--ব্যতিক্রম যেন না হয়!!
লেখকঃ সামিয়া ইসলাম

Related

Story 9155264187254334860

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

প্রিয় পাঠক! যদি পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লেগে থাকে, অথবা পোস্টটিতে আপনার সমস্যা থেকে থাকে তবে একটি গঠনমূলক মন্তব্য করার অনুরোধ করছি । কারন আপনার একটি ভালো মন্তব্য লেখককে আরো ভালো পোস্ট লেখার অনুপ্রেরণা যোগাবে। আশাকরি এমন কোন মন্তব্য করবেন না, যা পড়লে লেখকের কাছে খারাপ লাগতে পারে । সাথেই থাকুন ধন্যবাদ....

মনে রাখবেন: এই ব্লগের কোনও সদস্যই কোনও মন্তব্য পোস্ট করতে পারে৷

emo-but-icon
:noprob:
:smile:
:shy:
:trope:
:sneered:
:happy:
:escort:
:rapt:
:love:
:heart:
:angry:
:hate:
:sad:
:sigh:
:disappointed:
:cry:
:fear:
:surprise:
:unbelieve:
:shit:
:like:
:dislike:
:clap:
:cuff:
:fist:
:ok:
:file:
:link:
:place:
:contact:

পেজে লাইক দিন l

ভিজিট করেছেন

549,928
item